জেলার সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতালটিতে নাক, কান ও গলার সিনিয়র কনসালট্যান্টের পদটিও শূন্য। পাঁচ বছর ধরে বড় ধরনের অস্ত্রোপচারও বন্ধ আছে। এক বছর আগে শূন্য হয়েছে সহকারী পরিচালকের পদ। সাত মাস ধরে বিকল ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন।
২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক দ্য ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের দুস্থ মানুষের চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালটিতে সরঞ্জাম দেয়। চক্ষু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০১-০৭ পর্যন্ত হাসপাতালে ৬৯৬, ২০০৮-১৩ পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০১ এবং ২০১৪-১৭ সাল পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৯৯ রোগীর চোখের ছানির অস্ত্রোপচার করা হয়। ২০১৮ সালে অস্ত্রোপচার হয় ৩ হাজার ৭৮৮ জনের।
১৩ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ দিনে হাসপাতালের তৃতীয় তলার বহির্বিভাগের চক্ষু ওয়ার্ডে দুই চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা ও সফিকুল ইসলাম চোখের সমস্যা নিয়ে আসা ৬৫১ জন রোগীকে সাধারণ সেবা দিয়েছেন। গতকাল সোমবার চোখ পরীক্ষা করিয়েছেন ২৩ জন। কিন্তু দৃষ্টি পরীক্ষার জন্য চক্ষু ওয়ার্ডে থাকা দুটি স্লিট ল্যাম্পের একটি অকেজো হয়ে গেছে। অপরটি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া দ্রুত সঠিক লেন্স বা চশমা নির্ধারণ করার যন্ত্রটিও নষ্ট হয়ে গেছে।
ওয়ার্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি কক্ষের কোটি টাকা দামের দুটি লেজার মেশিন, কালার ফান্ডাস ফটোগ্রাফি ও ওসিটি মেশিনও দীর্ঘ তিন বছর ধরে ব্যবহার না করায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এসব যন্ত্র দিয়ে ডায়াবেটিসের কারণে চোখের রেটিনায় সমস্যা হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়।
চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ২০-৩০ শতাংশ রোগীই চোখের ছানির অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে আসেন। দুটি স্লিট ল্যাম্পের একটি অকেজো ও অন্যটির লাইট নষ্ট হওয়ায় চোখ পরীক্ষা করতে সমস্যা হয়। ভালো রিডিং আসে না।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রানা নুরুস শামস বলেন, হাসপাতালে চক্ষু বিভাগের জন্য জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালট্যান্টের দুটি পদ রয়েছে। দুটি পদই শূন্য। তিন বছর ধরে এ পর্যন্ত ১০-১৫ বার চিকিৎসক পদায়নের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে। কয়েক দিন আগেও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। কাজ হয়নি। অপর দিকে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।